বৃহস্পতিবার, ২৩ ডিসেম্বর, ২০২১

নৌকাবিরোধীদের এলাকা ছাড়ার নির্দেশ দিলেন সাবেক এমপি বদির

 কক্সবাজারের টেকনাফ পৌর নির্বাচনে নৌকার পক্ষে না থাকাদের এলাকা ছাড়তে বলেছেন আলোচিত সাবেক সংসদ সদস্য আবদুর রহমান বদি। গত ১৯ ডিসেম্বর নৌকা মনোনীত প্রার্থী ও বর্তমান পৌর মেয়র মোহাম্মদ ইসলামের জনসভায় দেওয়া বক্তব্যটি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে। প্রার্থী মোহাম্মদ ইসলাম সম্পর্কে বদির চাচা। তার এ বক্তব্যের প্রতিবাদে সংবাদ সম্মেলন করেছেন স্বতন্ত্র প্রার্থী মোহাম্মদ ইসমাইল।

আলোচিত সাবেক এমপি বদি

জনসভায় দেওয়া বক্তব্যে আবদুর রহমান বদিকে বলতে শোনা যায়, ‘ঘরের মধ্যে আরামে বউ বাচ্চা নিয়ে যারা থাকতে চাও, তারা মেহেরবানি করে ভোটের পরে এলাকায় (টেকনাফে) আসবেন। এখন এলাকা ছেড়ে চলে যান।

তিনি বলেন, ‘আমি সবাইকে বলছি, তোমরা তোমাদের ছেলে, তোমাদের ভাইদের নিয়ন্ত্রণ করবা। ভোটের আগে নৌকাবিরোধী কাউকে টেকনাফের পৌরসভার ভেতরে রাস্তায় যদি আমি দেখি, পরে তোমরা কেউ আমাকে দোষ দিতে পারবে না। আমি ওপেন ঘোষণা দিলাম।’

সাবেক এমপি বদি আরও বলেন, ‘তোমরা ইয়াবার ব্যবসা করে টাকা-পয়সা আয় করেছ। এ টাকা যদি আমার বিরুদ্ধে ব্যবহার করো, তাহলে তোমরা কেউ শান্তিতে থাকতে পারবে না। বিশেষ করে নৌকাবিরোধীরা।’

বদির দেওয়া বক্তব্যে সুষ্ঠু নির্বাচন নিয়ে শঙ্কা প্রকাশ করে সংবাদ সম্মলেন করেছেন টেকনাফ পৌর নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী মোহাম্মদ ইসমাইল।

বৃহস্পতিবার (২৩ ডিসেম্বর) কক্সবাজার শহরের রান্নাঘর রেস্তোরাঁর সম্মলেনকক্ষে সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, ‘আমার নিশ্চিত জয় বুঝতে পেরে আমাকে ঠেকানোর জন্য শুরু থেকেই মাঠে নামে নৌকা প্রতীকের প্রার্থী হাজি মোহাম্মদ ইসলাম ও তার আপন ভাতিজা সাবেক এমপি আবদুর রহমান বদির নেতৃত্বাধীন কুচক্রী মহল। এদের দ্বারা প্রভাবিত হয়ে রিটার্নিং কর্মকর্তা ঠুনকো অজুহাতে গত ২৯ নভেম্বর আমার প্রার্থিতা বাতিল করেন। গত ২ ডিসেম্বর জেলা প্রশাসক বরাবর আপিল করলেও তিনি আগের আদেশই বহাল রাখেন। পরে ৮ ডিসেম্বর আমি হাইকোর্টে রিট করি।’

স্বতন্ত্র প্রার্থী মোহাম্মদ ইসমাইল আরও বলেন, ‘গত ১২ ডিসেম্বর রিটের শুনানি শেষে হাইকোর্ট আমার প্রার্থিতা বৈধ ঘোষণা করে নির্বাচনে অংশগ্রহণ ও প্রতীক বরাদ্দের নির্দেশ দেন। আদালতের আদেশ উপজেলা নির্বাচন অফিসে পৌঁছালে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা ১৫ ডিসেম্বর আমাকে মোবাইল ফোন প্রতীক বরাদ্দ দেন।’

সংবাদ সম্মেলনে স্বতন্ত্র প্রার্থী 

অভিযোগ করে তিনি আরও বলেন, ‘প্রতীক বরাদ্দের দিন রাত ৮টার দিকে প্রতিদ্বন্দ্বী নৌকা প্রতীকের প্রার্থী হাজি মোহাম্মদ ইসলাম ও সাবেক এমপি আবদুর রহমান বদির নেতৃত্বে আমার বাসভবনে হামলা ও গুলিবর্ষণ করা হয়। ওই সময়ে আমি জাতীয় জরুরি সেবা ৯৯৯-এ ফোন করে সহযোগিতা চাইলে টেকনাফ থানার পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।’

অভিযোগ প্রসঙ্গে নৌকার প্রার্থী টেকনাফ পৌর মেয়র মোহাম্মদ ইসলাম বলেন, ‘এমন কথা ভাতিজা (বদি) বলে থাকলে তার দায় ভাতিজার।’

তবে বক্তব্যের বিষয়ে জানতে সাবেক এমপি আবদুর রহমান বদির মোবাইলে একাধিকবার ফোন দিলেও তিনি রিসিভ করেননি।

কক্সবাজার জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা এসএম শাহাদাত হোছাইন বলেন, এ ধরনের অভিযোগ আমরা পাইনি। তবে সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ ভোটগ্রহণ নিশ্চিত করতে সবই করা হবে।

সংবাদটি শেয়ার করুন:

Author: verified_user

ই-মেইল:rsmnewsbangla24@gmail.com